বাংলাদেশে বছরে ৯০ থেকে ১১০ জন হাতি, ভালুক, বাঘ ও কুমিরের আক্রমণে মারা যান। তাঁদের পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। আহত ব্যক্তিরাও ক্ষতিপূরণ পান। এ জন্য নির্দিষ্ট ফরমে প্রমাণসহ আবেদন করতে হয়। প্রক্রিয়াটি জটিল হওয়ায় অনেকে ওই আবেদন করতে পারেন না।
ওই চার বন্য প্রাণীর আক্রমণে কারও মৃত্যু হলে তিন লাখ টাকা, গুরুতর আহত হলে অনধিক এক লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান আছে। সরকারি বনাঞ্চলের বাইরে লোকালয়ে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হলে অনধিক ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে।
সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে, দেশে সবচেয়ে বেশি সাপের কামড়ের শিকার হন খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলের মানুষ। সম্প্রতি চন্দ্রবোড়ার আক্রমণ নিয়ে বেশি আলোচনা হলেও বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যান গোখরা ও কালকেউটের কামড়ে। আর সবচেয়ে বেশি মানুষ সাপের আক্রমণের শিকার হন মে, জুন ও জুলাই মাসে। মূলত বর্ষায় দেশের উপকূলীয় এলাকার মানুষ এবং বন্যার সময় উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের মানুষ সাপের কামড়ের শিকার হন বেশি।
বাংলাদেশে সাপের কামড়ের সবচেয়ে বেশি শিকার হন কৃষকেরা। চর এলাকায় বর্ষার এ সময় সাপের উপদ্রব বেশি থাকে। দরিদ্র এসব মানুষ একবার সাপের কামড়ের শিকার হলে তাঁদের আর্থিক, সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিক ক্ষতি হয়। অন্যদিকে সাপ বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্য প্রাণী। তাই সাপও মারতে দেওয়া যাবে না। আবার মানুষের ক্ষতি হলে তা পূরণেরও ব্যবস্থাও নিতে হবে। এ কারণে আমাদের আইনে অন্য প্রাণীর পাশাপাশি সাপের কামড়ে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি যুক্ত করা উচিত বলে মনে করছেন অনেকে।
সম্প্রতি রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপের কামড়ে মৃত্যু নিয়ে সারা দেশে আলোচনা চলছে। বিষধর ওই সাপের আক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গত শনিবার সরীসৃপ–বিশেষজ্ঞদের নিয়ে অনলাইনে ওই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভায় বিশেষজ্ঞরা সাপের আক্রমণে কেউ আহত বা মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।